আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘তাঁদের মিথ্যাচারের জবাব দিতে আমাদের রুচিতে বাধে।’
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। এ সময় বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সাংবাদিকেরা আরেকটি প্রশ্ন করতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তিনি বিবৃতি দিয়েছেন। আজ আওয়ামী লীগের নেতাদের কথার উত্তর দিতে তিনি বসেননি।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ১৯ জানুয়ারি জিয়াউর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে নয় দিনের কর্মসূচির ঘোষণা দেন মির্জা ফখরুল।
কর্মসূচি ঘোষণার আগে বিএনপির মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগ যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে, সেই চেতনাকে তারা বেমালুম গিলে খেয়ে ফেলেছে। নষ্ট করে ফেলেছে। ধ্বংস করে ফেলেছে।
জিয়াউর রহমান বিভাজনের রাজনীতি বাদ দিয়ে ঐক্যের রাজনীতি শুরু করেছিলেন উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন জিয়াউর রহমান। তিনি বিভাজনের রাজনীতি বাদ দিয়ে ঐক্যের রাজনীতি শুরু করেছিলেন। আজকে দুর্ভাগ্যজনক এবং ইচ্ছাকৃতভাবে আওয়ামী লীগ সেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়ে একদলীয় শাসনব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।
গত ১৫ বছরে তাঁরা (আওয়ামী লীগ) অত্যাচার, নির্যাতন ও নিপীড়নের মধ্য দিয়ে, হত্যা ও গুমের রাজনীতির মধ্য দিয়ে আবারও বিভক্তির রাজনীতির সূচনা করে একদলীয় দুঃশাসন চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের বড় ব্যর্থতা, তারা এ দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে, দুর্নীতিতে খেয়ে ফেলেছে। বিচার বিভাগকে তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিচ্ছে না। রাষ্ট্রের সব জায়গায় দলীয়করণ করে ফেলেছে। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপিসহ অন্য রাজনৈতিক দলগুলো ১০ দফা কর্মসূচি দিয়েছে। সেই ১০ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নে গোটা জাতি নেমে পড়েছে। আওয়ামী লীগের অত্যাচার ও নির্যাতনের মাত্রা যত বাড়ছে, মানুষের মনোবল তত দৃঢ় হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
১৯ জানুয়ারি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে নানা কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে জিয়াউর রহমান অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক শুধু নয়, অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একজন নেতা। সে জন্য বিএনপি তার জন্মদিন স্মরণ করে রাখতে একটা বড় কর্মসূচির আয়োজন করছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানুল্লাহ, সদস্যসচিব আমিনুল হক প্রমুখ।
৯ দিনের কর্মসূচি
১৯ জানুয়ারি সকালে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন, বেলা ১১টায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং একই দিন বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আলোচনা সভা করবে বিএনপি।
জিয়াউর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে পোস্টার প্রকাশ করা হয়েছে। ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে। ঢাকাসহ সারা দেশে দোয়া ও আলোচনা হবে বলেও জানান মির্জা ফখরুল।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ১৮ জানুয়ারি চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতার আয়োজন করবে। ১৭ জানুয়ারি আলোচনা সভা করবে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল। ২০ জানুয়ারি জাতীয়বাদী সামাজিক সংস্থা (জাসাস) সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করবে। এ ছাড়া ২১ জানুয়ারি জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল, ২২ জানুয়ারি জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল, ২৩ জানুয়ারি জাতীয়বাদী কৃষক দল, ২৪ জানুয়ারি জাতীয়তাবাদী যুবদল এবং ২৬ জানুয়ারি জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল আলোচনা সভার আয়োজন করবে।
এ ছাড়া ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি নিজ উদ্যোগে বিভিন্ন স্থানে গরিব দুস্থদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করবে। জাতীয়তাবাদী ওলামা দল ১৮ জানুয়ারি দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করবে।
0 Comments