Random Posts

ভেড়ামারায় অনুষ্ঠিত হলো গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ‘ঝাপান’ খেলা

চেতনায় কুষ্টিয়া প্রতিবেদক ॥ কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার জুনিয়াদহ পরানখালী গ্রামের আখ সেন্টারের পাশে অনুষ্ঠিত হলো গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী সাপ খেলা প্রতিযোগিতা। যা ‘ঝাপান’ খেলা নামে পরিচিত। আর এ খেলা দেখতে ভিড় করেছিল অসংখ্য নারী, পুরুষ, বয়োবৃদ্ধ থেকে শুরু করে শিশু কিশোররাও। খেলা দেখে তারা যেমন আনন্দ পেয়েছেন তেমনি সাপের খেলা দেখিয়ে সাপুড়েরাও হয়েছেন খুশি, পেয়েছেন পুরুস্কার ও। সোমবার বিকেল ৫টায় উপজেলার জুনিয়াদহ পরানখালী গ্রামের আখ সেন্টারের পাশে ঝাপান বা সাপ খেলা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। আর এ খেলা চলে রাত পর্যন্ত। ঝাপান খেলা প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় ভেড়ামারা ও মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকার ১৬জন সাপুড়ে। এরমধ্যে শিশু ও নারী সাপুড়েও রয়েছেন। মানত থাকার পাশাপাশি আধুনিকতার ছোঁয়ায় প্রাচীন ও গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য সাপ খেলার হারানো গৌরব ফেরাতে এবং নতুন প্রজন্মকে জানাতে স্থানীয় সাপুড়ে মনজিল হোসেন ও তার স্ত্রী ঝাপান খেলা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন।
সাপ খেলা দেখতে দুর দুরান্ত থেকে ছুটে আসেন নারী, পুরুষ, বয়োবৃদ্ধ থেকে শুরু করে শিশু কিশোররাও। সাপ খেলা দেখে তারা বেজায় খুশি। প্রতিটি গ্রামেই যেন এমন আয়োজন করা হয়, এমন দাবীও ছিল তাদের। আর এ প্রতিযোগিতায় বাহারি রঙের বিভিন্ন প্রজাতির শতাধিক সাপের নাচ উপভোগ করেন কয়েক হাজার দর্শক।
প্রতিযোগিতার নিয়ম অনুযায়ী কাঠের পাটাতনের ওপর সাপ ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর সাপুড়েরা কোমর দুলিয়ে বিন বাজিয়ে নেচে গেয়ে সাপের ফনা তুলার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হোন। যে সাপুড়ে যতবেশী সাপের ফনা উচু করাতে পারবেন, সেই-ই হবেন বিজয়ী। এ প্রতিযোগিতায় ২৪ ইঞ্চি উচু সাপের ফনা তুলাতে পেরে খেলার আয়োজক মনজিল হোসেন প্রথম হয়ে পেয়ে যান খাসি ছাগল পুরুস্কার। ২৩ ইঞ্চি উচু সাপের ফনা তুলিয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন মিরপুরের সাপুড়ে সবুজ হোসেন। তিনি পান রাজহাস এবং তৃতীয় স্থান দখল করেন একই উপজেলার লিটন আলী নামে অপর সাপুড়ে। তিনি পান পাতিহাস। তবে খেলার নিয়ন অনুযায়ী যে সাপ যতবার সাপুড়েকে ছোবল দিবে তার তত পয়েন্ট অর্থাৎ নম্বর কর্তন হবে। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।
ঝাপান খেলা বা সাপ খেলা একটি গ্রামীণ ঐতিহ্যের অংশ, যা একসময় গ্রাম বাংলায় বিভিন্ন দিবস বা ঘরোয়া আয়োজনে দেখানো হতো। কিন্তু এখন প্রযুক্তি আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় দিন দিন এসব খেলা হারিয়ে যাচ্ছে। তাই এই হারিয়ে যাওয়া এতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন এমন আয়োাজনের। এমনটাই মনে করেন সাপ খেলা দেখতে আসা দর্শকসহ খেলার আয়োজক মনজিল হোসেন।

Post a Comment

0 Comments